শিরোনাম: পবনপুত্র হনুমানের জন্মকাহিনী

রচনাশৈলী: আবৃত্তিমূলক গল্প (Narrative Style)
ভাষা: বাংলা (Bangla Story Script)


🎧 [গভীর সংগীতের আবহ, ধীর গতি]

🌄
"মেরু পর্বতের শান্ত গভীরে, গর্জনহীন এক ছায়াময় প্রান্তরে, গৌতম ঋষির আশ্রমে ঘেরা নির্জন বনাঞ্চলে বাস করতেন এক বিশেষ বানর-দম্পতি – কেসরী এবং অঞ্জনা।

কিন্তু অঞ্জনা কি সত্যিই শুধুই এক বানরিনী ছিলেন?
না! এক কালের স্বর্গসুন্দরী অপ্সরা, যাঁর কপালে জুটেছিল এক কঠিন অভিশাপ।"

🎭
"অঞ্জনা একদিন পৃথিবীর বনে ভ্রমণ করছিলেন। হঠাৎ চোখে পড়ে, এক বানর ধ্যানস্থ! কী কৌতুক! এক বানর সন্ন্যাসীর মতো বসে আছে? তিনি হেসে ওঠেন। কেবল হাসা নয়, তিনি বানরটিকে পাথর ছুঁড়ে বিরক্ত করতে থাকেন।

কিন্তু ওই যে ধ্যানভঙ্গ!
যেই মাত্র চোখ মেলে তাকালেন সেই 'বানর' – আগুনে দৃষ্টিতে জ্বলে উঠল আকাশ!
তিনি আসলে ছিলেন এক মহান ঋষি, যিনি রূপ ধারণ করেছিলেন সাধনার তরে।
তৎক্ষণাৎ উচ্চারণ করলেন অভিশাপ –
“তুমি এক সাধুর ধ্যানভঙ্গ করেছো! তুমি এখন থেকে বানররূপে জন্ম নেবে। তবে মুক্তি পাবে কেবল তখনই, যদি তুমি মহাদেবের অংশাবতার এক পুত্রের জননী হও!”"

🧘‍♀️
"অঞ্জনা রীতিমতো ভীত ও লজ্জিত!
তাঁর বুকজুড়ে জ্বলে ওঠে তপস্যার দীপ।
তিনি বসে পড়েন কঠিন তপস্যায় –
না খেয়ে, না পান করে – শিবের চরণে প্রার্থনা নিবেদন করেন দিনের পর দিন…

এদিকে দূরে, অযোধ্যার রাজা দশরথ অশ্বমেধ যজ্ঞে ব্রতী।
যজ্ঞের শেষে অগ্নিদেব এক দেবত্বপূর্ণ প্রসাদ দেন, যা ভাগ করা হয় রাণীদের মধ্যে।
শিবের নির্দেশে বায়ু দেব সেই প্রসাদের এক অংশ নিয়ে উড়ে আসেন অঞ্জনার কাছে।
তিনি বলেন –
'তুমি শীঘ্রই পুত্রসন্তানের জননী হবে –
যার মধ্যে থাকবে বুদ্ধি, সাহস, বল, বেগ এবং আকাশে উড়ে চলার শক্তি!'"

🌟
"অঞ্জনার হৃদয় তখন আনন্দে প্লাবিত!
কিছুদিনের মধ্যেই জন্ম নেয় এক অপূর্ব পুত্র –
বানরের মুখ, কিন্তু ঈশ্বরের তেজ!

তাঁর নাম রাখা হয় – অঞ্জনেয়া
অঞ্জনা তখন মুক্তি পান অভিশাপ থেকে এবং ফিরে যান স্বর্গে।
আর পিতা কেসরী, পবনদেবের আশীর্বাদপুষ্ট সেই পুত্রকে বড় করে তোলেন আদর-ভালোবাসায়।"

🌞
"শৈশবেই ছিল সেই পুত্রের অসাধারণ বল এবং দুষ্টুমির ছাপ।
একদিন সে সূর্যকে দেখে ভাবে এটি বুঝি এক পাকা আম –
সে আকাশে উড়ে যায় সূর্য গ্রাস করতে!

তখন ইন্দ্র বজ্রাঘাতে আঘাত করেন তাঁর চোয়ালে –
চোয়াল জ্বলে উঠে ব্যথায়, কিন্তু পায় এক নতুন নাম –
হনুমান!
(সংস্কৃত ‘হনু’ – চোয়াল)"

📖
"এই হনুমানই হলেন রামভক্ত, শ্রীসীতার অনুগত, এবং এক মহাবীর –
যিনি রামায়ণের ইতিহাসে হয়ে ওঠেন অমর চরিত্র।
তাঁর নাম যুগে যুগে স্মরণে আসে –
পবনপুত্র, মারুতি, অঞ্জনেয়া, বীর হনুমান!"

🙏
"এই ছিল পবনপুত্র হনুমানের অলৌকিক জন্মকাহিনী –
যেখানে ভক্তি, শাস্তি, মুক্তি আর আশীর্বাদের সম্মিলন ঘটেছে এক অসাধারণ যাত্রায়।"

📿
জয় শ্রী রাম!
জয় হনুমান!

Reviewed by শ্রী শ্রী সত্যনারায়ণ নমঃ on June 14, 2025 Rating: 5

No comments:

হনুমান চলিশা ও বজরং বান – পার্থক্য জানুন | Hanuman Chalisa vs Bajrang Baan Explained in Bengali

  হনুমান চলিশা ও বজরং বান – পার্থক্য জানুন | Hanuman Chalisa vs Bajrang Baan Explained in Bengali 🎙️ ইনট্রো স্ক্রিপ্ট (ব্যাকগ্রাউন্ডে শা...

Powered by Blogger.